কার্টেসিঃ মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সাংবাদিক,
লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।
***********************************************************************
লামা মিরিঞ্জা ও মাতামুহুরীর অপরুপ দৃশ্য, বিকাশমান পর্যটন শিল্পকে হাতছানি
দিচ্ছে। সবুজের শ্যামল আঙ্গিণায় অন্তর্বিহীন মৌন নিস্তব্দ সৌন্দর্যের দিগন্ত
বিস্তৃত গ্রন্থিল পাহাড়ীকার এক মনোরম পরিবেশে অবস্থিত লামা মিরিঞ্জা পর্যটন
কেন্দ্র। সাপেরমতো এঁকে-বেঁকে বয়ে চলা মাতামুহুরী নদী নীরব চঞ্চলতায় অবিরাম গতিতে
প্রবহমান। নদীর কোলঘেসে সারিবদ্ধ পাহাড়গুলো যেন প্রকৃতি তার সবুজাচলদ্বারা ঢেকে
রেখেছে। বিশুদ্ধ বাতাসে কলরোল তোলে এখানকার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও ভূ-প্রকৃতি।
বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তফা জামাল জানান, দীর্ঘমেয়াদি
পরিকল্পনা নিয়ে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো হলে, বারো
মাসই ভ্রমন পিপাসুদের পদভারে মুখরিত থাকবে এই স্থানটি। মোস্তফা জামাল আরো জানায়,
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নের্দশনায় মিরিঞ্জা পর্যটন শিল্প বিকাশে
সমচিত পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে।
সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে পনর শ্ ফুট
সু-উঁচু পাহাড় চুড়ায় নির্মিত হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রটি। যেখানে দাড়িয়ে কক্সবাজার
কুতুব দিয়া মহেশখালীর বেলাভূমি মনমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়। পরিকল্পিতভাবে এর
বিকাশ ঘটানো হলে “মিরিঞ্জা’’ পর্যটন
কেন্দ্রটি নজর কাটবে ভ্রমন পিপাসুদের। চারদিকে সবুজ বেষ্ঠনি, মেঘমালা আর সারি সারি পর্বতরাজি, অদূরবর্তী
বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গের সাথে একাকার সবুজের ঢেউ। শীতের কুয়াশা, বর্ষায় নরম মেঘের চাদরে প্রকৃতি তার ভালবাসায় জড়িয়ে রাখে আগন্তকদেরকে।******
ভ্রমন পিপাসুদের চাহিদা পূরণে মিরিঞ্জিা পর্যটন কেন্দ্রে যুক্ত হচ্ছে ক্যাবলকার। পর্যটন এলাকার অদূরবর্তী মাতামহুরী নদীতীরে সুখিয়া পাহাড় পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর ফলে এই পর্যটন শিল্পে নতুনমাত্রা যোগ করবে এঁকে-বেঁেক বয়ে চলা মাতামুহুরীর অপরুপ দৃশ্য। পাহাড়ের কোলঘেসে মাতামুহুরীর স্রোতধারে পাহাড় থেকে নেমে আসা বানরের দল যেন নানান ভঙ্গিমায় অভ্যার্থনা জানায় আগন্তকদের। নদীর দু’দ্বারে সারি সারি পর্বতরাজি যেন মহান সৃষ্টি কর্তার অকৃপন হাতে মুষ্টিমৃত্তিকা। অফলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেও দেখার স্বাধ মিটেনা যে কোন কারোর।
****
মিরিঞ্জা পর্যটন এলাকা থেকে প্রায় তিন কি:মি: উত্তরে পাহাড় চুড়া দিয়ে লামাশহরের কোলঘেসে সুখিয়া নামক একটি পাহাড় পর্যন্ত সড়কটি নির্মিত হবে। নদী ও শহরের কোলঘেসে অবস্থিত সুখিয়া পাহাড়ের চুড়ায় রয়েছে বড় মাঠসম ভূমি। শহরের হরেক রকম বাতি, নীল আকাশের তারকারাজি; পাহাড় চুড়ায় রাতের দৃশ্য যেন ‘ প্রকৃতি তাঁর শ্যামলাঙ্গিণা ঢেকে রেখেছে সবুজ আচঁলে’।
****
পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে নির্মিতব্য সড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে কর্টেজ, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ব্রান্ডের রিসোর্ট থাকবে। পর্যটন কেন্দ্রের পূর্ব-উত্তর দিকে পাহাড়ের তলদেশে প্রবাহমান পানির ছড়ায় বাঁধ দিয়ে লেক তৈরি করা হবে। প্রকৃতির মনোহরা দৃশ্য, তার উপর ঝুলন্ত সেতু ও ক্যাবলকার স্থাপন করে এই স্থানটিকে পর্যটকদের কাছে অনন্য করে তোলা হবে।
****
৫ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে মিরিঞ্জা পর্যটন এলাকা ও বিকেলে মাতামুহুরী নদীপথে পর্যবেক্ষণকালে লামায় পর্যটন শিল্প বিকাশে কিকি হবে, এসব তথ্য জানাযায়। পর্যবেক্ষণকালে বুয়েট থেকে আসা দু’জন আর্কিটেক এসবের একটি মাস্টার পরিকল্পনা করার জন্য বলেন। পর্যবেক্ষণ দলের প্রধান বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা জামাল জানান, লামায় পর্যটন শিল্প বিকাশে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যাশহ্লা-এর নির্দেশনায় তিনি একটি মাষ্টার পরিকল্পনা করতে চলেছেন। মোস্তফা জামাল জানান, ক্যাবলকার স্থাপন, জলদ্বার-লেক সৃষ্টি, পর্যটন এলাকা থেকে সুখিয়া পাহাড় নদী পয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন করে, পর্যটকদের আধুনিক চাহিদা পূরণে পরিকল্পিতভাবে এর বিকাশ ঘটানো হবে। এখানে আসা পর্যটকরা পাহাড় নদী দু’টা একসাথে উপভোগ করবে।
****
লামা শহর থেকে ৬ ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে ১২ কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত প্রধান সড়কের পাশ ঘেষে এ নান্দঁনিক স্পটটির অবস্থান।