Check PAGE RANK of Website pages Instantly

Check Page Rank of your Web site pages instantly:

This page rank checking tool is powered by PRChecker.info service

Tuesday, September 26, 2017

লামায় ২০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ: লাভজনক তামাকের বিকল্প চাষ!!!

কার্টেসিঃ মোহাম্মদ কামারুজ্জামান,সাংবাদিকলামাবান্দরবান পার্বত্য জেলা।
*******************************************************************************
লামা উপজেলায় চলতি বছর ২০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ করেছে কৃষকরা। বান্দরবান কৃষি গভেষণা ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইক্ষু গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদার করণ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সুপারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। উপজেলায় বিএসআরআই- ৪২ রংবিলাস, চায়না-২৮, অমৃত-৮৪১, সিও-২০৮ ও বিএমসি-৮৬-৫৫০  জাতের আখ চাষ করেছে ১১০ জন চাষী। কৃষকরা আখ ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে আলু, গাজর ও ফরাশসিম চাষ করে লাভবান হচ্ছে। আখ ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ আরো কয়েকটি কৃষি ফসল চাষে লামা কৃষি বিভাগ প্রযুক্তি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।

আখ বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন অর্থকরি একটি ফসল। প্রতি হেক্টর আখ চাষে কৃষকের খরছ হয়েছে ২ লাখ টাকা। আর প্রতি হেক্টরে উৎপাদিত আখ বিক্রি হচ্ছে ১১ থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকা। জলাবদ্ধতা না থাকায় এখানকার ভূমিতে আখ ফলন ভালো হয়। প্রতি হেক্টরে ১১০-১২০ মেট্রিক টন আখ চাষ হয়, সেমতে লামায় এবছর দু’ হাজার চার শত মে:টন আখ উৎপাদন হয়েছে। দেশের ঐতিহ্যবাহী অর্থকরি এই ফসলটি এই অঞ্চলে তামাক চাষের বিকল্প হতে পারে।
লামা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নুরে আলম জানান, গ্রীষ্মপ্রধান দেশের রৌদ্রোজ্জ্বল উষ্ণ আবহাওয়ায় আর্দ্র মাটিতে আখের সব চেয়ে ভালো ফলন হয়। বেলে দোঁআশ থেকে শুরু করে এঁটেল পর্যন্ত সব মাটিতেই আখ চাষ করা সম্ভব হলেও পানি নিকাশের ব্যবস্থাযুক্ত এঁটেল দোঁআশ মাটি আখ চাষের জন্য সর্বোত্তম। সহনীয় উষ্ণ তাপমাত্রা, প্রচুর রৌদ্র ও আলো-বাতাস এবং মাঝে মধ্যে বৃষ্টিপাত আখ চাষের সহায়ক।
তিনি বলেন, বর্ষজীবী ফসল হওয়ার কারণে প্রায়ই সারা বছরই মাঠে আখ থাকে। এতে অনেক কৃষক আখের চেয়ে অন্য লাভজনক অর্থকরী ফসল জন্মাতে বিশেষ করে তামাক চাষে আগ্রী হয়ে ওঠে। ফলে সাম্প্রতিককালে তামাকের ভয়াল বিস্তার ঘটে চলছে। যদিও বছর ব্যাপি মাঠে আখ থাকে তার পরেও লাভের দিক বিবেচনা করলে তামাকের চেয়ে কমপরিশ্রম ও বিনিয়োগে কয়েকগুণ বেশি লাভ হয় আখ চাষে।
তিনি বলেন পার্বত্য এই ভুমিতে আখ চাষের অনুকুল পরিবেশ বিদ্যমান। কৃষক মাত্র এক বছরে অধিক লাভজনক আখ ফসল বাজারজাত করতে পারে। অক্টবর থেকে মার্চ মাসেমর মধ্যে এ ফসল ঘরে উঠে, এর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। ভেষজগুণে সমৃদ্ধ আখ চিবিয়ে খাওয়ার স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন চিনি কলগুলোতে যাচ্ছে। গড়ে প্রতি হেক্টর আখে কৃষকের বিনিয়োগ হয় সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা। বিক্রি হয় ১১ থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকা।
লামা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুইচিংমং মার্মা জানান, সে প্রায় এককানি জমিতে রংবিলাস-৪২ জাতের আখ চাষ করেছে। তাঁর মোট ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। বিক্রিমূল্য পাচ্ছে সে, দড়ে- থেকে দুই লাখ টাকা। আগে এই ভূমিতে তামাক চাষ করে তিনি খরছ বাদ দিয়ে ৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারতেন না। সে সাথী ফসল হিসেবে আখের ফাঁকে গাজর, ফরাশসিম ও আলু চাষও করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ইক্ষু গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদার করণ প্রকল্প বাংলাদেশ সুপারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর লামা উপজেলায় দায়িত্বরত বৈজ্ঞানিক সহকারি বসন্ত কুমার তঞ্চঙ্গা জানান, তাঁরা কয়েকজন কৃষকের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে সাড়ে তিন হেক্টর জমিতে এ বছর আখ চাষ করিয়েছেন। এর মধ্যে রংবিলাস-৪২, অমৃত-৮৪১, চায়না-২৮, সিও-২০৮ ও বিএমসি-৮৬-৫৫০ জাতের আখ চাষ হয়। ্সবের মধ্যে চিবিয়ে খাওয়া ও চিনি বা গুড় জাত রয়েছে। তিনি জানান, তামাকের বিকল্প চাষ হিসেবে এখানকার মাটিতে আখ চাষের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ইক্ষু গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদার করণ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সুপারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট এখানকার সব চাষিকে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করলে, পরিবেশ বিদ্ধেষী তামাক চাষ আগ্রাসন থেকে রক্ষা পাবে এই জনপদ। সে সাথে মরণ ব্যধি ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেয়ে কৃষকরা আর্থিক লাভবান হবে। এমন মন্তব্য করেছেন পরিবেশ সচেতন স্থানীয়রা।