Check PAGE RANK of Website pages Instantly

Check Page Rank of your Web site pages instantly:

This page rank checking tool is powered by PRChecker.info service

Friday, December 22, 2017

লামাকে জেলা পূণ:র্বহাল না করে দ্বি-খন্ডিত করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রূখে দাঁড়াবে লামাবাসী

কার্টেসিঃ মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সাংবাদিকলামাবান্দরবান পার্বত্য জেলা।
************************************
বৃহত্তর লামা উপজেলার গজালিয়া থানাকে পাশ কাটিয়ে সরই ইউনিয়নকে থানা করার প্রতিবাদে সোচ্ছার হচ্ছে লামাবাসী। একই সাথে লামাকে পূর্ব ঘোষিত জেলা বাস্তবায়নের দাবীতে আন্দোলনে নামারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্থানীয়রা।
সূত্রে জানাগেছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে সরই ইউনিয়নকে থানা করার পক্ষে গোপন প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। এ প্রেক্ষিতে সরকারের পূর্ব ঘোষণামতে গজালিয়াকে থানা করার পক্ষে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ জনমতের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কিন্তু স্থানীয় জনগণের চাওয়াকে তুচ্ছজ্ঞান করে একটি মহল পূর্বঘোষিত থানা গজালিয়াকে পাশ কেটে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া নিয়ন্ত্রিত সরই ইউনিয়নকে থানা করার চেষ্টা করছেন। এতদ সংক্রান্ত বিষয়ে ২৮ ডিসেম্বর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরই ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণ শুনানী।
এদিকে সাবেক মহকুমা লামাকে পূর্বের ঘোষণানুযায়ী জেলা বাস্তবায়ন না করে, আরেকটি থানা করার বিষয়টি; লামা উপজেলাকে দ্বি-খন্ডিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। সামগ্রিক বিবেচনায় সাবেক মহকুমা লামা’কে পূর্ব ঘোষণামতে জেলা বাস্তবায়ন না করে; আরেকটি থানা করে বৃহত্তর এই উপজেলাকে দ্বি-খন্ডিত করে রাজনৈতিক গুরুত্ব কমিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবে তরুণ প্রজম্ম।
বিগত ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক গোপন প্রতিবেদন অনুযায়ী লামা উপজেলায় আরো একটি থানা বর্ধিত করার পক্ষে মতামত পেশ করেন। একই বিষয়ে ২০১৭ সালে মতামত চেয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার-এর নিকট পত্র প্রেরণ করেন উধর্তন কর্তৃপক্ষ। ওই সময় গজালিয়া, আজিজ নগর, ফাইতং ও সরই ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ গজালিয়াকে থানা ঘোষণার পক্ষে লিখিত দাবী জানান। কিন্তু পূজিবাদী কিছু উচ্চাভিলাসীদের মন রক্ষায় কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের দাবী ও নিয়মনীতি বিসর্জন দিতে চলেছেন; এমন অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জনগোষ্টির পক্ষ থেকে।
জানা যায়, বাংলাদেশ সরকারের ‘থানা প্রশাসন পূণর্বিন্যাস অধ্যাদেশ ১৯৮২' এর অনুবলে প্রশাসন বিকেন্দ্রিকরণ কর্মসূচীর আওতায় ১৯৮২ ইং সালের ৭ নভেম্বর, বান্দরবান জেলাধীন লামা মহকুমার অর্ন্তগত- গজালিয়া, আলীকদম ও বাইশারী ইউনিয়নকে প্রথম শ্রেণীর ‘মানোন্নিত থানা’ ঘোষণা দেয়া হয়। একই সময় লামা মহকুমাকে জেলা ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার নিদর্শন হিসেবে, এর আগে ২৭/৫/১৯৭৭ ইং তারিখে লামার সাবেক প্রশাসনিক এলাকা টিডিএন্ডডিসিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা বোর্ড প্রশাসক জনাব আলী হায়দার খাঁন লামা জেলা বোর্ড বিশ্রামাগারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। প্রস্তরের ওই স্বেত পাথরে লেখা ফলকটি এখনো বিদ্যমান। ১৯৮১ ইং সালে বান্দরবানকে জেলা, তারপর ১৯৮২ সালে লামাকে জেলা ঘোষণা করা হয়।
কিছুদিন পর দুর্গম যোগাযোগসহ নানান কারণে; আলীকদম থানা বহাল রেখে গজালিয়া ও বাইশারী থানা কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় সরকার। বান্দরবান কেন্দ্রিক তৎসময় একচেটিয়া নের্তৃত্ব ধরে রাখার হীন উদ্দেশ্যে লামা জেলা এবং গজালিয়া, বাইশারী ও আলীকদমকে ঘোষিত থানা কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলে স্থানীয়রা জানান। এর ফলে সকল সম্ভাবনা থাকা সত্তেও বান্দরবান দক্ষিণ জনপদের বিভিন্ন সম্প্রদায় বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকারের ‘থানা প্রশাসন পূণর্বিন্যাস অধ্যাদেশ ১৯৮২' এর অনুবলে প্রশাসন বিকেন্দ্রিকরণ-এর নাগরিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। বর্তমান বাস্তবতায় জনস্বার্থে “লামা” জেলা ও গজালিয়াকে উপজেলা বাস্তবায়ন করার জোর দাবী উঠেছে স্থানীয়ভাবে।
এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, গজালিয়ার ৬ নং ওয়ার্ডে থানা প্রশাসন করা হলে, এটি পার্শ্ববর্তী আজিজ নগর, সরই ও ফাইতং ইউনিয়ন সমুহের মধ্যবর্তী চুম্বক অংশ হবে।
পূর্ব ঘোষিত গজালিয়া থানার আয়তন-১২৪.৩১ বর্গ কি:মি:, গ্রাম-৮১ টি, মৌজা-৪টি, জন সংখ্যা- ১৭ হাজার, ভোটার- ৬৫১৭, হাট-বাজার ৬টি, এর মধ্যে ২টি সরকারি। গজালিয়া ৬ নং ওয়ার্ডের ভৌগলিক অবস্থান আজিজ নগর, সরই ও ফাইতং ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থান। সব কিছু পার্বত্য অধিবাসী ও আদীবাসী জনগোষ্ঠি নিয়ন্ত্রিত। ফাইতং ইউনিয়নের আয়তন-৬৪.৭৫ বর্গ কি:মি:, গ্রাম/পাড়া-৪৯টি, মৌজা-১টি, জনসংখ্যা- ১৭৪০৭, ভোটার- ৭১৫৪, হাট-বাজার-২টি। ভূ-অবস্থান কক্সবাজার চকরিয়াস্থ আরাকান সড়কের পাশ ঘেঁসে। ব্যবসা বাণিজ্য ও নেতৃত্ব চকরিয়া নিয়ন্ত্রিত।
সরই ইউনিয়ন : আয়তন- ৯৪.২৪ বর্গ কি: মি:, গ্রাম- ৬০ টি, জনসংখ্যা-১৩২৭৩, ভোটার- ৫৯৬৮, হাট-বাজার- ৪টি, সরকারি-১টি, মৌজা- ৩টি। ভু-অবস্থান সমতল এলাকা লোহাগাড়া পুটিবিল্যা ইউনিয়ন ঘেঁসে। ব্যবসা- বাণিজ্য ও নের্তৃত্বে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ানিবাসী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
আজিজ নগর ইউনিয়ন : আয়তন-৬১.৪৭ বর্গ কি: মি:, গ্রাম- ৬৪টি, মৌজা- ১ টি, জনসংখ্যা-১৬ হাজার, ভোটার- ৬৪৭০, হাট বাজার- ৪টি। ভূ-অবস্থান কক্সবাজার-ঢাকা চট্টগ্রাম মহা সড়কের পাশ ঘেঁসে (একজন পাকিস্তানী পুঁজিবাদ ব্যবসায়ির নাম করণে) অবস্থিত। ব্যবসা-বাণিজ্য ও নের্তৃত্বে লোহাগাড়া ও চকরিয়ার একাংশ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত।
এই ৪টি ইউনিয়নের মোট আয়তন- ৩৪৪.৭৭ বর্গ কি: মি:। মোট জনমংখ্যা- ৬৩,৬৮০, মোট ভোটার-২৬১০৯, গ্রাম- ২৫৪ টি, হাট-বাজার-১৬ টি। জন সংখ্যা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ভু-আয়তন এবং অবস্থান বিবেচনায়, সসর্বোপরি বিগত ১৯৮২ সালের ঘোষণানুযায়ী “লামা” জেলা ও “গজালিয়া’কে থানা (উপজেলা) ঘোষণা করা একান্ত অপরিহার্য্য বলে দাবী করেছেন লামা উপজেলা নাগরিক ফোরামের নের্তৃবৃন্দ।
জানাগেছে, একটি মহল পুঁজিবাদ ব্যবসায়ীদের মনরক্ষায় লোহাগাড়া নিয়ন্ত্রিত সরই ইউনিয়নকে উপজেলা (থানা) করার জোর তদবির করে চলছে। লামা নাগরিক ফোরামের নের্তৃবৃন্দ জানান, পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসী ও আদিবাসীদের অধিকার সু-রক্ষায় ও ভবিস্যৎ প্রজম্মের নেতৃত্ব বিকাশের লক্ষ্যে গজালিয়াকে থানা বা উপজেলা এবং লামাকে জেলা করা দরকার। ঐতিহাসিক বিচারে ও আইনগতভাবে লামা জেলা, বাইশারী ও গজালিয়া উপজেলা হওয়া দরকার। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনি লড়াইয়ে যাবেন স্থানীয়রা। এছাড়া সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়ে রাজপথে যৌথ আন্দোলনে নামারও চিন্তা করছেন নবীন-প্রবীন প্রজম্মের নেতৃবৃন্দ।