Check PAGE RANK of Website pages Instantly

Check Page Rank of your Web site pages instantly:

This page rank checking tool is powered by PRChecker.info service

Saturday, March 3, 2018

লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আশা-নিরাশার ৫০ বছর পূর্তিঃ ১০ মার্চ সুবর্ণ জয়ন্তি উৎসব!!!

১০ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানঃ লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় আশা-নিরাশার ৫০ বছর
*********************************
কার্টেসিঃ মোহাম্মদ কামারুজ্জামানসাংবাদিক, লামা
*********************************
লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে ১০ মার্চ। আশা-নিরাশার দোলায় খসে গেল ৫০ বছর। অর্ধশত বছর পূর্তিতে লামার নবীন প্রবীন প্রজম্মের সরব উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে লামা সদর। প্রজাতন্ত্রের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীসহক বহু রতি মহারতিরা সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন। ধন্য হবে বিদ্যালয় আঙ্গিণা; প্রত্যাশা পূরণ হবে স্থানীয়দের।
**
প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :
**
দেশ স্বাধীনের আগে ১৯৬৭ সালে টিডিএন্ডডিসি প্রশাসনিক এলাকায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এলাকার কিছু শিক্ষানুরাগি ব্যাক্তির উদ্যাগে তৎসময় লামা জুনিয়ার হাইস্কুল নাম করণে এটি প্রতিষ্ঠা পেয়ে কিছুদিন পর লামা বহুমুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নাম করণ হয়। ১৯৭৯ সালে লামা থানা মহকুমায় রুপান্তরিত হয়। লামার প্রথম মহকুমা প্রশাসক জুলফিকার হায়দার চৌধুরী ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আলী হায়দার খানের সহযোগিতায় তৎকালীন সরকার এটিকে সরকারি করণ করে ১৯৮০-৮১ সালে। এর পর গজালিয়া মৌজার টিডিএন্ডডিসি হতে বর্তমান স্থান ছাগল খাইয়া মৌজায় স্থানান্তরিত হয় বিদ্যালয়টি। জমি দাতা হলেন জনাব আবদু ছালাম। তিনি ৫ একর জমি দান করেন বিদ্যালয় ভবন ও মাঠ নির্মানের জন্য। বিদ্যালয়টি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধিনে ১৯৮২ সালে প্রথম এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
**
যেভাবে যাঁদের অবদান রয়েছে :
**
একদা মাতামুহুরী নদী পথে যাওয়া ছনের ইজারার অর্থ দিয়ে এই বিদ্যাপিঠটির পথ চলা শুরু। লোকমূখে শুনা যায়; বমুবিলছড়ির হাজী হাফেজ আহমেদ ছিলেন নদী পথের ইজারাদার। এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যাদের নাম শুনা যায়; তারা হলেন, লামা সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) সুলতান মাহমুদ, গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবু ম্রাথোয়াই অং চৌধুরী, হাজী হাফেজ আহমেদ (টুনু মেম্বার) প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য, হাজী বদরুদ্দৌজা চৌধুরী, নুর আহম্মেদ (পোষ্ট মাষ্টার), খুইল্যা মিয়া সওদাগর, নুর মোহাম্মদ চৌধুরী, আবদুল লতিফ মেম্বার (বমুবিলছড়ি) ও ডাক্তার সূর্য্য কুমার চৌধুরী, আজিজুর রহমান কন্টাক্টর, লামা ইউনিয়নের প্রথম চেয়ারম্যান থইহ্লাখইন মার্মা প্রমূখ।
**
যাঁরা আলো ছড়িয়েছেন এবং আলোকিত হয়েছেন :
**
প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন; রশিদ আহমদ, এর পর নাছির আহমদ, নেপাল কান্তি দত্ত (ভারপ্রাপ্ত), নুরুল আলম, নেপাল কান্তি দত্ত। এই বিদ্যাপিঠের প্রথম এসএসসি পাশ ছাত্র মায়েছা মার্মা (বর্তমানে উচ্চমান সহকারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বান্দরবান) তিনি লামা বহুমুখি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে চকরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সেন্টারে পরীক্ষায় প্রথম এসএসসি পাশ করেন। ১৯৮২ সালে লামা কেন্দ্রে প্রথম ব্যাচে পরীক্ষার্থী ছিলেন, ১৪ জন। এসএসসি পরীক্ষায় ফাষ্ট ডিভিশন পেয়েছিলেন, জাইতুন নাহার (বর্তমানে লামা আ:বা: উ: বি: সিনিয়র সহকারী শিক্ষক)। ১৯৮৩ সালে এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম ষ্টান্ড; কুমিল্লা বোর্ড থেকে অষ্টম স্থান পান সিরাজুল হক (বর্তমানে দুদুক-এর সহকারী পরিচালক)। এসএসসি সেন্টার হওয়ার পর প্রথম পরীক্ষার্থী ১৪ জন হলেন; এম রুহুল আমিন, জোবাইরা বেগম, রুহুল আমিন কুতুবী, জাহেদা বেগম, নজরুল ইসলাম, সফর আলী, আমির হোসেন, রহিমা বেগম, অংথোয়াইহ্লা মার্মা, উচ্চতমনি তঞ্চঙ্গা, ধুমং মার্মা, স্বপন কান্তি চৌধুরী, মো: মুরাদ, ও এহেছানুল করিম রিয়াজু।
**
আরো যাঁরা অবদান রেখেছেন :
**
বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হওয়ার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইসিবি বর্তমান স্থানে বিদ্যমান একটি পাহাড় কেটে মাঠ ও ভবন নির্মানের উপযোগি করে দিয়েছিল। সে সাথে লামার কিংবদন্তী নেতা আলহাজ্ব মো: আলীমিয়া একটি পুকুর খনন করে দেয়। যে পুকরটি বর্তমানে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সাতার প্রশিক্ষণসহ স্থানীয়দের পানির চাহিদা পূরণে ভুমিকা রেখে চলছে। লামা শহরের অদূরে উত্তর দিকে কক্সবাজার জেলার চকরিয়াধিন বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিনের কোলঘেষে এই বিদ্যাপিঠের অবস্থান। চারদিকের সবুজ বেষ্ঠনি স্কুল আঙ্গিানাটি এক চমৎকার পরিবেশে অবস্থিত। এ প্রতিষ্ঠানের অনেক ছাত্রছাত্রী সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে অবদান রেখে যাচ্ছেন। সাংবাদিক মানবাধিকার কর্মি এম রুহুল আমিন বলেন, নাছির উদ্দিন, নুরুল আলম ও নেপাল কান্তি দত্ত; এ তিন শিক্ষকের অবদান লামাবাসী চিরকাল স্বরণ করবে। কারণ; এরাই প্রান্তিক এই জনপদে ছাত্রছাত্রীদেরকে পড়া লেখায় উৎসাহ যুগিয়েছিলেন। পাশাপাশি নিজ পকেটের অর্থদিয়ে পাহাড়ী ছেলে-মেয়েদেরকে লেখা পড়ায় প্রেরণা যুগিয়েছিলেন বিদ্যালয়ের অন্যতম শিক্ষক সমর কান্তি চৌধুরী। তিনি কিছুদিন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
**
আলোয়-আধাঁর :
**
লামা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই জনপদে আধাঁরে আলো ফুটেছিল। কিন্তু সময়ের নিষ্ঠুর পথপরিক্রমায় সে আলো নিভু নিভু ভাব। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ৯০’দশক পর্যন্ত বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান ছিল কাঙ্খিত। এরপর থেকে শিক্ষক সংকট, স্থানীয় শিক্ষকদের আধিপত্য বিস্তার, স্থানীয় নেতৃত্বের স্বার্থনান্ধতা, সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের অবহেলায় পড়ালেখার ক্রমবোনতি হতে থাকে। এই বিদ্যাপিঠের বহু ছাত্রছাত্রী বিসিএস পাশ করে ডাক্তার ইজ্ঞিনিয়ার, প্রফেসর, জজ, জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হওয়ার গৌরবার্জন করেছেন। বিগত কয়েক বছর ধরে শিক্ষক সংকট হেতু বিদ্যালয়টি স্বীয় ঐতিহ্য হারিয়েছে।
**
বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষায় স্থানীয়রা :
**
এ বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা সমস্যা সমাধানের দাবী করেও কোন সুরাহা পাননি। ছাত্র অভিভাবকরা জানায়, ১০ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য সূবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে আগমন ঘটবে অনেক কৃতি মানুষের। এর ফলে স্থানীয়দের দীর্ঘ প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির সমন্বয় সাধন হবে। নিরসন হবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকটসহ নানান প্রতিবন্ধকতা। লামা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিবিত সমস্যা নিরসনে কোন ফলপ্রসু কোন সুরাহা মিলবে; বিদ্যালয়ের ৫০ বছরের মিলন মেলাকে ঘিরে।
**
বিদ্যালয়ে যা আছে; যা নেই :
**
বিদ্যালয়ের মোট ভূমির পরিমান ১০.৯২ একর।  বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২৭ জন শিক্ষকের স্থলে রয়েছে ৭ জন। ছাত্রসংখ্যা প্রায় ৭ শ্। ৭ জনের কাজ করছেন ২ জন কর্মচারী। ১টি সুবিশাল খেলার মাঠ, ১টি পুকুর, ১টি পাকা মসজিদ, পাঠাগার, আইটি ল্যাব-১টি, বিজ্ঞানাগার-১টি, জিমনেসিয়াম, ছাত্রবাস-১টি, শিক্ষক ডরমেটরী-১টি তাও জীর্ণদশায় রয়েছে। কর্মচারী ডরমেটরী-নেই। একাডেমিক ভবন-২টি, এর মধ্যে ১টি পুরাতন টিনশেড। টয়লেট বিহীন ছাত্রবাস ৪টি। প্রধান শিক্ষক নেই, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ৮ জন শিক্ষক ৬শ্ ছাত্রছাত্রীকে পাঠদান করাচ্ছেন। ৭ জন কর্মচারীর স্থলে রয়েছে ২জন। বাংলা বিভাগে ও ইংরেজি বিভাগে ৪জন করে ৮জন শিক্ষক থাকার কথা, কিন্তু এদু’টি গুরুত্বপূর্ন বিভাগে ১জনও শিক্ষক নেই। গণিতের শিক্ষক ৩ জনের স্থলে ১জনও নেই। ভৌত বিজ্ঞান ২ জনের ১জনও নেই। জীব বিজ্ঞান ২ জনের একজনও নেই, ব্যবসায় শিক্ষা রয়েছে ১জন শিক্ষক। ১জন করে ভূগোল ও কৃষি শিক্ষক থাকার কথা, চারুকলা শিক্ষক ১জন আছে। শারিরীক শিক্ষক ১জনের স্থলে রয়েছে ২ জন (!) এছাড়া উচ্চমান সহকারী নেই, এমএলএসএস ৫ জনের স্থলে রয়েছে ১জন ও নিম্মমানসহকারী ১জন আছে।