সমাজ কল্যাণ মূলক ‘সেবা’ নামক একটি সংগঠনের আয়োজনে বৃহস্পতিবার লামা টাউন হলে ‘এসো গল্পে গল্পে স্বপ্ন বুনি’ শীর্ষক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয় পর্যায়ে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের উদ্বুদ্ধকরণে ‘সেবা’র এই কর্মসূচীতে নিজেদের জীবনের স্বপ্নগাঁথা-সফলতার কাহিনী শোনালেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জেসমিন আক্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দিপান্বীতা ভট্টাচার্য ও লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু।
সকাল ১০ টায় নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু-এর সভাপতিত্বে প্রথম পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি-সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, মাতামুহুরী কলেজের অধ্যক্ষ মো: রফিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তফা জামাল, সেবার চেয়ার পার্সন- আইআইইউসি’র ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিব উল্লাহ, লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইয়াহিয়া বাবুল, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম ইমতিয়াজ, লামামুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ: শুক্কুর। অনুষ্ঠানে লামা উপজেলার স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শতাদিক ছাত্রী কৃতি নারীদের বীরত্বের গৌরবগাঁথা কথাগুলো মনদিয়ে শ্রবণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিসহ বক্তারা বলেন বর্তমান সরকারের নারী বান্ধব কর্মকান্ড বাংলাদেশের রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থার গন্ডি পেরিয়ে নারীরা বিশ্বায়নের সাথে তালমিলিয়ে চলছে। প্রধান মন্ত্রী, স্পিকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, কৃষি-টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী ছাড়াও জাতীয় সংসদে রয়েছে নারীদের বলিষ্ট ও স্বচ্ছ নেতৃত্ব।
সরকারের উদার দৃষ্টিভঙ্গি, সু-শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা আজ সফলতা অর্জন করার সুযোগ পাচ্ছে। বক্তারা বলেন, ‘সেবা’র এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের নারী-মেয়েদেরকে যোগ্য নাগরিক হতে অনুপ্রাণিত করবে। ফলে সমগ্র সমাজ মানস নারী বান্ধব হবে এবং এতে করে সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ত্বরান্বিত করবে।
বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের যথাযথ সম্মান, স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা প্রদান করে সমাজের আপামর নারীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করা এবং তাঁদের অপুযোগ পরিবেশ সৃষ্টি করা। নারীর অগ্রযাত্রায় সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে সমাজকে অগ্রসর হওয়ার পথ সুগম করা। ফলশ্রুতিতে জেন্ডার সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে দেশের সুষম উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নারীকে আধুনিক-যোগ্যতার মানদন্ডে প্রতিষ্ঠিত করা।
বক্তার বলেন, স্বাধীনতার পূর্বে ও ঐতিহাসিকভাবেই নারীকে গৃহপ্রকোষ্ঠে আবদ্ধ রাখা হয়েছে। পরিবার থেকেই তাদেরকে বিজ্ঞান চর্চায় অংশগ্রহণ কিংবা উদ্বুদ্ধ করা হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯২৩ সালে সমান অধিকার আইন আকারে গৃহীত হবার পর নারীদেরকে উল্লেখযোগ্য হারে বিজ্ঞান বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। কিন্ত বিজ্ঞানে অংশগ্রহণের হার প্রকৌশল বিদ্যার তুলনায় নিম্নমুখী। বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে ডক্টরেট গ্রহণের সংখ্যা, প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রীর সংখ্যায়, ইত্যাদি বিষয়ে স্বাধীনতা পূর্বে নারীদের অংশ গ্রহন ছিল প্রায়ই শুণ্যের কোঠায়। শিক্ষাক্ষেত্রে আইনের মাধ্যমে নারীকে বিশেষায়িত করলেও এখনো এ পেশায় বেশ অসমতা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ১৯৮৯ সালে বিজ্ঞানী হিসেবে পুরুষের অংশগ্রহণ ছিল ৬৫% এবং মাত্র ৪০% নারী উচ্চ পদে আসীন ছিলেন। যেখানে পূর্ণাঙ্গকালীন একজন বিজ্ঞানীর বার্ষিক আয় $৪৮,০০০; সেখানে নারীর আয় ছিল $৪২,০০০। বর্তমান সরকার নারীর মর্যাদা রক্ষা করে দেশ-দেশের বাহিরেও নারীর নিরাপদ ও সম্মানজন অবস্থান তৈরিতে বদ্ধপরিকর।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা: তথ্য- মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সাংবাদিক, লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা।